আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শহীদ হন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ নেতা শরীফ ওসমান হাদী। তাঁর এ আকস্মিক মৃত্যুতে সম্পূর্ণ দেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে, পাশাপাশি ক্ষোভ ও প্রতিবাদ আন্দোলন জোরালোভাবে দেখা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) এ ঘটনার প্রেক্ষিতে এক গভীর শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দেন। তিনি বলেন, “আমরা সবাই মহান আল্লাহর কাছে শহীদ ওসমান হাদীর রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। পাশাপাশি তাঁর নিরাপত্তা ব্যবস্থা অস্পূর্ণতার জন্য গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করছি।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, শহীদ ওসমান হাদীর শাহাদাতের ঘটনায় ছাত্র-জনতার মধ্যে যে আবেগ এবং ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে, তা স্বাধীন ও ন্যায্য। তবে, এই ক্ষোভের অপব্যবহার করে কেউ যদি নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য পরিস্থিতি ঘোলাটে করে দেয়, তা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, কেউ কেউ এই পরিস্থিতি ব্যবহার করে আন্দোলনকে ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে যেতে চায়, যা স্বাভাবিক বিষয় নয়।
গণমাধ্যমের ভূমিকা সম্পর্কে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ ও মানুষের কণ্ঠস্বর। এজন্য গণমাধ্যমের ওপর হামলা মানে গণতন্ত্রের চর্চা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও আইনের শাসনের বিরোধিতা।” তিনি জনসাধারণকে পরিষ্কারভাবে অনুরোধ করেন, শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক protest-ই মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত, অন্যথায় আন্দোলনের লক্ষ্য আর অর্জন কষ্টকর হবে।
শহীদ ওসমান হাদীর হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে তিনি বলেন, “এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত চিহ্নিত ও আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।” তাদের দ্রুত বিচারে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
আলোচনার শেষ দিকে, আমির বলেন, দেশের এই সংকটময় মুহূর্তে সংযম, দায়িত্বশীলতা ও জাতীয় ঐক্যই একমাত্র উন্নতির চাবিকাঠি। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বিশ্বাস করে, গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ প্রতিষ্ঠা করেই শহীদদের আত্মত্যাগের মান রাখার সম্ভব।
অবশেষে, তিনি সকল দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতা ও সাধারণ নাগরিকদের অনুরোধ করেন, কোনো উসকানিতে পা না দিয়ে ধৈর্য্য ও সচেতনতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে। এই শাস্তি ও কঠিন সময় মোকাবেলার একমাত্র পথ হলো একতায় থাকা ও দায়িত্বশীলতা।
Leave a Reply